
২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত এবং ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এই তদন্ত কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামিম হাসনাইন। অন্যান্য সদস্যরা হলেন—সাবেক অতিরিক্ত সচিব (গ্রেড-১) শমিম আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুর হক সুপণ, ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরাম হোসাইন, এবং নির্বাচন বিশ্লেষক ড. মো. আব্দুল আলীম।
কমিটির কার্যপরিধি ও লক্ষ্য:
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কমিটি নির্বাচনী অনিয়ম, দুর্নীতি ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা, গণমাধ্যম এবং নাগরিক সংগঠনগুলোর প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করবে। এছাড়া নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা এবং কমিশনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত আর্থিক অনিয়ম তদন্ত করা হবে।
কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে আরও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
- নির্বাচনগুলোর নিরপেক্ষতা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ ও বিশ্লেষণ
- অনিয়মের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ
- ভবিষ্যতের সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইন ও প্রশাসনিক কাঠামোতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ
কমিটি আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
সহায়তা ও এখতিয়ার:
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিটিকে সচিবালয় সহায়তা প্রদান করবে, আর নির্বাচন কমিশন দেবে তথ্য ও লজিস্টিক সহায়তা। প্রয়োজনে কমিটি যেকোনো সরকারি দপ্তরের দলিল তলব করতে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। এছাড়া কমিটি প্রয়োজনে অতিরিক্ত সদস্য কো-অপ্ট করার অধিকারও রাখে।
অধ্যাপক ইউনূসের নির্দেশেই প্রজ্ঞাপন:
গত ১৭ জুন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে কমিশনের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিতর্কিত তিনটি নির্বাচনের তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ অন্যান্য সদস্যরা।
এই নির্দেশের প্রেক্ষিতেই আজ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করে তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয়।